
নয়াদেশ ডেস্ক রিপোর্ট॥ সৌদি আরবে আইনগতভাবে এখনো মদ্যপান ও মদের বাণিজ্য নিষিদ্ধ। তবে ধীরে ধীরে বিধিনিষেধে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। কয়েক বছর আগে প্রথমবারের মতো রাজধানী রিয়াদের কূটনৈতিক পাড়ায় অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য সীমিত পরিসরে রাষ্ট্রিয়ভাবে মদ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সৌদিতে বসবাসরত ধনী অমুসলিম বিদেশি নাগরিকদেরও মদ কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে রিয়াদের একমাত্র সরকারি অনুমোদিত লিকার শপের সামনে এখন প্রতিদিনই গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্বের একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মদ কেনার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করেছে দেশটির সরকার। যেমন— ক্রেতাকে অবশ্যই অমুসলিম বিদেশি হতে হবে, এবং তার মাসিক আয় থাকতে হবে কমপক্ষে ৫০ হাজার রিয়াল (প্রায় ১৩,৩০০ মার্কিন ডলার)। রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত এই দোকানটিই সৌদিতে সরকারি স্বীকৃত একমাত্র মদের দোকান। সেখানে শুধুমাত্র পণ্য কেনা যায়, খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। শুরুতে কেবল কূটনীতিকরাই সেখান থেকে মদ সংগ্রহ করতে পারতেন, পরে প্রিমিয়াম ভিসাধারী বিদেশিদের জন্যও অনুমতি দেওয়া হয়।
প্রায় গত এক মাস ধরে প্রিমিয়াম ভিসায় থাকা বিদেশিরা মদ কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। বর্তমানে সৌদিতে এ ক্যাটাগরির বিদেশির সংখ্যা ১২ হাজার ৫০০–এর বেশি।
তাদের একজন এএফপিকে জানান, “সৌদিতে মদ বিক্রি হবে- এটা প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। দোকানে ঢুকে নিয়মমাফিক যাচাই–বাছাই শেষে কেনার অনুমতি পাই। আরেকজন বিদেশি বলেন, বন্ধুদের অনেকেই প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস করেনি। পরে যখন মদ কিনে দেখালাম, তখন সবাই বিস্মিত হয়ে যায়।
ইসলামে মদ নিষিদ্ধ হলেও ১৯৫২ সালের আগে সৌদিতে মদ বিক্রির দোকান ছিল। পরে আইন পরিবর্তন করে মদ্যপান ও মদ বিক্রি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন সালমান ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর দেশটিতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা সংস্কার শুরু হয়।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং অর্থনীতিকে বহুমুখী করতে নেওয়া উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ধীরে ধীরে এসব নিয়মে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলেই ধারণা করা হয়। সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে জেদ্দা ও দাহরান অঞ্চলেও আরও দুটি নতুন অনুমোদিত লিকার শপ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন