৭০ বছরের ইতিহাস ভেঙে মোংলা বন্দরে রেকর্ড জাহাজ

প্রকাশিত: ১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২১

বাগেরহাট প্রতিনিধি॥ করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর বাগেরহাটের মোংলায় সর্বোচ্চ বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়েছে। এর ফলে ৭০ বছরের ইতিহাসে রেকর্ড আয় করেছে এই বন্দর।

কর্তৃপক্ষ রোববার জানিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে মোংলা বন্দরে ৯৭০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়েছে। এতে আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা এসেছে ১৩০ কোটি টাকা।

সকাল ১০টায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা।

এ সময় চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে এক হাজারের বেশি জাহাজ এই বন্দরে নোঙর করবে বলে আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এতে আয় আসবে ৩৬০ কোটি টাকা। খরচ বাদ দিয়ে এতে নিট লাভ হবে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা।’

১৯৫০ সালে বৃটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ ‘দ্য সিটি অব লায়নস’ প্রথম সুন্দরবনের পশুর নদীর জয়মণিরগোল এলাকায় নোঙর করে। এটাই ছিল মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার সূচনা। এরপর থেকে দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পথচলা শুরু করে মোংলা।

রোববার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত অর্থবছরে মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১৪ হাজার ৪৭৪টি গাড়ি অবতরণ এবং ৪৩ হাজার ৯৫৯টি ইইউজ কন্টেইনার জাহাজে খালাস-বোঝাই হয়।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মধ্যে মোংলা বন্দরের এমন জাহাজ আগমনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ী এবং সংশ্লিষ্টরা। এর আগের অর্থাৎ ২০২০-২৯ অর্থবছরে মোংলা বন্দরে জাহাজ ভিড়েছিল ৯০৩টি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯১২টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭৮৪টি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬২৩টি জাহাজ ভিড়েছিল এই বন্দরে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তফা কামাল জানান, বন্দর প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরে এত জাহাজ বন্দরে আসেনি। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ী ও জনগণের কথা চিন্তা করে লকডাউনের মধ্যেও কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে, বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, মহামারি করোনার লকডাউনের মধ্যেও বন্দরের কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। জাহাজ, কার্গো, গাড়ি ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বন্দরের আয় স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতে এই বন্দরের কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।