নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে পোড়া কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান জানিয়েছেন, কারখানাটি থেকে লাশগুলো বের করা হচ্ছে। এখনও চূড়ান্তভাবে বলা যাচ্ছে না, ঠিক কতজন মারা গেছেন।
শুক্রবার (০৯ জুলাই) সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার নিচ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভবনে আটকাপড়ে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকদের উদ্ধারে দেরি হওয়ায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শুক্রবার বেলা ১১টার থেকে থেকে সাড়ে ১১টায় পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া-পাল্টার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তিনটি সর্ট গান লুট করে। পরে দুইটি উদ্ধার হলেও একটি এখনও উদ্ধার হয়নি।
অগ্নিকাণ্ডে ছয় তলা ভবনটির কয়েকটি ফ্লোরে অন্তত ৪৫ জন শ্রমিক আটকা পড়ে নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্বজনরা দাবি করছেন।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে ভবনের ভেতর থেকে প্যাকেট করা লাশ বের করা শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা।
এ সময় স্বজনরা, এলাকাবাসী ও বহিরাগতরা ধাওয়া করলে পুলিশ তাদের ছত্র ভঙ্গ করতে দফায় দফায় সর্টগানের গুলি ছোড়ে। এ পর্যন্ত দুইটি অ্যাম্বুলেন্সে ৪৯টি লাশ তোলা হয়েছে। লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলো ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশে পাঠানো হচ্ছে। লাশ উদ্ধারের কাজের জন্য আরও বেশ কয়েকটা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রেডি রাখা হয়েছে।
রূপগঞ্জের সজীব গ্ররুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা হলেন- জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারী, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান, জেলার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন, পুলিশের একজন প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদপ্তরের জেলার একজন কর্মকর্তা।