ভোজ্যতেলের বাজার অস্থির সিন্ডিকেটের কারসাজি

প্রকাশিত: ৮:০৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২

মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার॥ ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেটে কারসাজিতে চরম অস্থির দেশের ভোজ্যতেলের বাজার। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমার পরও দেশের বাজারে প্রতি লিটারে ৮ টাকা করে বাড়তি দর কার্যকর করেছে সরকার। ক্যাব বলেছে, ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে সরকার এ দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিনের বুকিং রেট ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ মার্কিন ডলার এবং পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪১০ মার্কিন ডলারে। দুইধরনের ভোজ্যতেলেই একদিনে বুকিং রেট কমেছে অন্তত ১৫ মার্কিন ডলার করে। কিন্তু সেই দর বিবেচনা না করেই প্রতি লিটারে বাড়তি ৮ টাকা কার্যকর করা হয়েছে গতকাল সকাল থেকে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন খুচরা বাজারের ক্রেতারা।
দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের বাড়তি দাম নিয়ে আবুল বাছির নামে এক ক্রেতা জানান, পণ্যের দামের এত ঊর্ধ্বগতি থাকলে আমরা দিন আনি দিন খাই এ রকম লোকেরা কোথায় যাব? তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত্বদের জন্যও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এভাবে ব্যয় বাড়লেও আয় তো বাড়ছে না? অবশ্য একই অভিব্যক্তি অধিকাংশ ক্রেতাদের।
আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমায় দেশের বাজারেও খোলা তেলের দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৭৪০ টাকা দরে। এবং প্রতি মণ পাম অয়েলের দাম ছিল ৫ হাজার ২৫০ টাকা। এক্ষেত্রে খোলা সয়াবিনের দাম কমার সত্ত্বেও বোতলজাত তেলের দাম বাড়ানোকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন পাইকারি বিক্রেতারা।
তারা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট বাড়লে, এখানেও বেড়ে যায়। আবার কমে গেলে, এখানেও কমিয়ে দেয়া হয়। এদিকে এক মাস আগের প্রস্তাবিত দর কোনো রকম যাছাই-বাছাই ছাড়াই হঠাৎ করে কার্যকর করে দেয়াকে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজি হিসাবেই দেখছে ক্যাব। এ অবস্থায় ভোজ্যতেলের দর নিয়ন্ত্রণে সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিলে, তা আরও লাগামহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের ক্যাব সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেছেন, বাজারে এখন যে ভোজ্যতেল রয়েছে, তা অনেক আগে থেকেই কেনা। সেক্ষেত্রে বুকিং রেট অনেক কম। তাই তাদের এখনকার দাবি অনুযায়ী, যে দাম বাড়ানো হয়েছে, তা একদমই গ্রহণযোগ্য নয় এবং নিন্দনীয়। ফলে এ দাম বাড়ানোর বিষয়টিতে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বর্তমানে বছরে ২২ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিকটন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। তবে বাজারে তেলের কোনো সঙ্কট নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।