নতুন আরও দুই মেট্রোরেল হচ্ছে NayaDesh NayaDesh প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০১৯ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক // নতুন আরও দুটি মেট্রোরেল নির্মাণ ব্যয় সহ প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার ২৩ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একনেকে অনুমোদন পাওয়া বাকি ৮ প্রকল্প হলো- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘ডোমার-চিলাহাটি-ভাউলাগঞ্জ (জেড-৫৭০৬), ডোমার (বোড়াগাড়ী)-জলঢাকা-(ভাদুরদরগাহ) (জেড-৫৭০৪) এবং জলঢাকা-ভাদুরদরগাহ-ডিমলা (জেড-৫৭০৩) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ ও ‘কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ছয়না-যশোদল-চৌদ্দশত বাজার সংযোগ সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘গৃহায়ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধন) প্রকল্প’, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকাস্থ মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ ও ‘ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ (প্রথম সংশোধন) প্রকল্প; পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ইরিগেশন ম্যানেজমেন্ট ইনম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট ফর মুহুরী ইরিগেশন প্রজেক্ট (দ্বিতীয় সংশোধন) প্রকল্প এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগে পুনঃবনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প। সকালে সভা শেষে সংবাদকর্মীদের ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আজ অনুমোদন পাওয়া নতুন দুই প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১)’ এবং ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৫): নর্দান রুট’ প্রকল্প। আর প্রথমে অনুমোদন পাওয়া মেট্রোরেল প্রকল্পের নাম ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এমআরটি লাইন- ৬)। মেট্রোরেল দুটির বেশিরভাগ অংশই মাটির নিচ দিয়ে যাবে। ১০ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার ২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৩০ হাজার ৪৬৬ কোটি, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫১৫ কোটি ৮৪ লাখ এবং বৈদেশিক ঋণ ৬৯ হাজার ৪৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। মোট টাকার মধ্যে দুই মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩ হাজার ৭৯৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ব্যয় প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন বেশি জমি অধিগ্রহণ করায় নতুন মেট্রোরেলের ব্যয় বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া মাটির নিচে ও এলিভেটেড দুই ধরনের হওয়ায় কারিগরি অনেক বিষয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। লাইন-১ এর আওতায় মোট ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ২১৫ কিলোমিটার পাতাল (আন্ডারগ্রাউন্ড) মেট্রোরেল এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার এলিভেটেড মেট্রোরেল হবে। লাইন-৫ এর আওতায় ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে হেমায়েতপুর থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড মেট্রোরেল এবং আমিনবাজার থেকে ভাটারা পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার পাতাল (আন্ডারগ্রাউন্ড) মেট্রোরেল হবে। আর এমআরটি লাইন-৬ রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল সিটি সেন্টার পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার এলিভেটেড মেট্রোরেল নির্মাণকাজ চলমান। লাইন-৬ প্রকল্পে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি সাত লাখ ২১ হাজার টাকা খরচ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ এবং জাইকা দিচ্ছে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ ২১ হাজার টাকা। ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম বা লাইন-৬ প্রকল্পের চেয়ে আজ অনুমোদন পাওয়া মেট্রোরেলের নতুন দুই প্রকল্প বড় ও খরচও অনেক বেশি। তবে লাইন-৬-এ নির্মাণের জন্য ১২ বছর সময় ধরা হলেও এই নতুন দুই প্রকল্পে কম সময় ধরা হয়েছে। এমআরটি লাইন-১ বাস্তবায়নের জন্য সময় ধরা হয়েছে ৭ বছরের কিছু বেশি, অর্থাৎ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর এমআরটি লাইন-৫ নির্মাণের জন্য সময় ধরা হয়েছে সাড়ে ৯ বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ এবং বৈদেশিক ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর এমআরটি লাইন-৫ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ১২১ কোটি ৪৯ লাখ ৬৭ দেবে বাংলাদেশ সরকার এবং ২৯ হাজার ১১৭ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার বৈদেশিক ঋণ। তাছাড়া, এখন সরকারি অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও আগামীতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে শেয়ার বাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া আগামীতে ধানমন্ডিকে ধরে আশপাশের এলাকার জন্যেও মেট্রোরেল তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সড়ক পরিহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। প্রকল্প দুটিতে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ প্রদান করছে। এছাড়াও, সরকারি আবাসিক ভবনে গ্যাস সংযোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে ধীরে ধীরে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারে মানুষকে অভ্যস্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। SHARES অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়: