আত্মসমর্পণ করবেন হাজী সেলিম প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২ নয়াদেশ রিপোর্ট॥ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করা হয়। এই মামলায় নিয়ম অনুযায়ী আত্মসমর্পণ করে হাজী সেলিম সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। হাইকোর্টের দেয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করবেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিচারিক আদালতের ১৩ বছরের দণ্ড থেকে কমিয়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দণ্ডিত হাজী মো. সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করার আগে হাইকোর্টের রায় অনুসারে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন হাজী সেলিম। আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে ৩০ দিন গণনা শুরু হতে পারে বলেও জানান আইনজীবী। সে হিসেবে আলাপ আলোচনা করে আত্মসমর্পণের দিন ঠিক করা হবে। এরপর আপিল আবেদন করা হবে বলে জানান আইনজীবী। আইনজীবী বলেন, হাইকোর্টের রায়ে হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে সুপিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করবো। আজ (বৃহস্পতিবার) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৬ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়। এ রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এর আগে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় প্রকাশ করে হাইকোর্ট। গত বছরের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে বিচারকের স্বাক্ষরের পর তা প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে আদালত ওইদিন বলেছে, বিচারিক আদালতে রায়ে দণ্ডিত হাজী মোহাম্মদ সেলিমের আপিল সংশোধন করে (আংশিক গ্রহণ ও আংশিক খারিজ) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ধারা সংক্রান্ত আপিল গ্রহণ করা হলো। এই আইনের ২৭ (১) এ আপিলের অংশ খারিজ করা হলো। এর আগে হাজী সেলিমের করা আপিলের ওপর গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করে হাইকোর্ট। ধার্য দিনে সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের করা আপিলের ওপর এ রায় ঘোষণা করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। প্রসঙ্গত ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লালবাগ থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। পরের বছর ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার সাজা বাতিল করে। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টে ওই আপিল (হাজী সেলিমের) পুনরায় শুনানি করতে বলা হয়। এরপর প্রায় পাঁচ বছর ওই আপিলের শুনানি হয়নি। সম্প্রতি আপিলটি শুনানির উদ্যোগ নেয় দুদক। পরে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক আদালতে থাকা মামলার যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করে। এরপর শুনানি নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিলটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। মামলায় দুদকের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। হাজী সেলিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। SHARES আইন আদালত বিষয়: